ঢাকাই চলচ্চিত্রের সুপারস্টার শাকিব খান। দীর্ঘ দুই দশক ধরে দাপটের সঙ্গে চলচ্চিত্রাঙ্গন দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। পাশপাশি তিনি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দুই বারের সভাপতি ছিলেন।
তবে সম্প্রতি গণমাধ্যমকে শাকিব খান বলেন, গত পাঁচ বছর ধরে এফডিসির অভ্যন্তরে কাজের চেয়ে সমিতি কালচার চর্চার ফলে হানাহানিতে চলচ্চিত্রের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
তিনি বলেন, অনেকে কাজ বাদ দিয়ে সমিতিনির্ভর হয়ে পড়ল। এফডিসি হয়ে গেল চলচ্চিত্র নয়, সমিতিনির্ভর একটি প্রতিষ্ঠান। কিছু অযোগ্য লোকের কাছে সিনেমার পরিবর্তে সমিতি হয়ে গেল ধ্যান-জ্ঞান। সমিতির নির্বাচন, পিকনিক, ইফতার পার্টি নিয়ে তাদের যেভাবে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় সিনেমা নিয়ে তত নয়। এতে করে চলচ্চিত্রের বারোটা বেজেই চলেছে।
এদিকে গত ৯ মার্চ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২১ প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, সিনেমা একজন মানুষের জীবনকে পাল্টে দিতে পারে, সমাজকে পাল্টে দিতে পারে। তাই অনুকরণ না করে এ ধরনের মানসম্মত সিনেমা তৈরিতে সংশ্লিষ্টদের মনোযোগ দিতে হবে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী আগামী বাজেটে সরকারী অনুদান প্রাপ্ত সিনেমাগুলোর টাকার অঙ্ক আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন।
চলচ্চিত্রের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর এমন কিছু উন্নত পরিকল্পনার কথা শুনে নিজের মুগ্ধতার কথা জানান শাকিব খান। প্রধানমন্ত্রীর এই কথাগুলোকে তিনি সাধুবাদ জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করে শাকিব খান বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী সবসময়ই শিল্প-সংস্কৃতি আর চলচ্চিত্রবান্ধব।
প্রধানমন্ত্রী বরাবরই চলচ্চিত্রের উন্নয়নে নিরলস ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন উল্লেখ করে এই সুপারটার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গোড়াপত্তন হয়েছিল। বাবার স্বপ্নের চলচ্চিত্র শিল্পকে পূর্ণতা দিতে ও সার্থক করতে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা অনবদ্য প্রশংসার দাবি রাখেন।
শাকিব বলেন, দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রী সব সেক্টরের উন্নয়নে শতভাগ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার এই প্রচেষ্টাকে সফল করার দায়িত্ব যাদের ওপর, এর দায়ভার ন্যস্ত হয় তাদের। সবাই যদি সততা ও একাগ্রতা নিয়ে কাজ করে যায় তাহলে প্রধানমন্ত্রীর সব স্বপ্নই সার্থক হবে। বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে সোনার বাংলায় পরিণত হবে।
চলচ্চিত্রে এখন জৌলুস অনেকটাই নেই। আশার বাণী শোনা গেলেও উত্তরণের দেখা সহসা মেলেনি। পরিত্রাণের উপায় কী? উত্তরে ঢাকাই চলচ্চিত্রের ‘সম্রাট’ শাকিব বলেন, আমার বিশ্বাস এই সংকট অচিরেই কেটে যাবে। এ জন্য দরকার চলচ্চিত্রের প্রত্যেকের কাজের প্রতি সততা ও ডেডিকেশন।
চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগ হারানোর নেপথ্যে স্টার সংকট, যোগ্য পরিচালকের অভাবের মান সম্মত সিনেমা কম নির্মিত হওয়া, অশ্লীলতা, পাইরেসি দায়ী বলে মনে করেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা। এসবের কারণে ধীরে ধীরে মানুষ সিনেমা হল বিমুখ হয়েছে। বাধ্য হয়ে শত শত সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে।