Home / মিডিয়া নিউজ / জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের ট্রফিতেও মরিচা, পাওয়া গেল আরও মেডেল!

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের ট্রফিতেও মরিচা, পাওয়া গেল আরও মেডেল!

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের স্বর্ণ মেডেলের পর এবার একই পুরস্কারের ট্রফির (পুতুল) উপর মরিচা

পড়ার ঘটনা পাওয়া গেছে। বাংলা ট্রিবিউন অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে, ২০০১ সাল থেকে পরের কয়েকটি

বছর, নব্বয়ের দশকের শুরুর দিক ও আশির দশকের মাঝামাঝিতে প্রদান করা পিতলের তৈরি এই স্বারকগুলোর ওপর মরিচা পড়েছে।

যার বেশ কিছু প্রমাণ মিলেছে সাতবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হওয়া শিল্প নির্দেশক উত্তম গুহর ঘরে।গীতিকবি মোহাম্মদ রফিউজ্জামানের ১৯৮৪ সালের ট্রফি গীতিকবি মোহাম্মদ রফিউজ্জামানের ১৯৮৪ সালের ট্রফি। ছবি- ওয়ালিউল বিশ্বাস

একই ঘটনা ঘটেছে দেশের অন্যতম গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের প্রাপ্ত ট্রফিগুলোতেও! এছাড়াও কিংবদন্তি সংগীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী, চলচ্চিত্র নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেলসহ আরও কয়েকজনের সোনার মেডেলে মরিচা পড়ার খবর পাওয়া গেছে। উত্তম গুহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি নিজেই শিল্প নির্দেশক। আমার তৈরি অনেক পুরস্কার মেডেল ও স্বারক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দিয়ে থাকে। এগুলো কীভাবে তৈরি হয়, এ সম্পর্কে বেশ ভালো ধারণা আমার রয়েছে। তাই যখন ট্রফিতে মরিচা পড়ে, আমি খুব আশ্চর্য হয়েছিলাম। আমি নিশ্চিত, এগুলোতে খাঁটি পিতল নেই। কারণ পিতলে কখনও মরিচা পড়ে না। হয়তো পিতলের প্রলেপের নিচে লোহা দেওয়া হয়েছে।’ তার ২০০১, ২০০২, ২০০৩ সালের ট্রফিগুলোর এমন দুরবস্থা। এ নির্দেশকের পাওয়া আগের ট্রফিগুলো বেশ ভালো আছে। উত্তম গুহ আরও বলেন, ‘এমন নয় যে, আমার পুরস্কারগুলোর যত্ন নিই না। আমি নিজ হাতে এগুলো পরিষ্কার করি ও যত্ন নিই। আমার পাওয়া বেশ কয়েকটি মেডেলেরও অবস্থা খারাপ। মরিচা না পড়লেও এগুলোর রং নষ্ট হয়ে লালচে হয়ে গেছে।’ ট্রফির একই বিষয়টি হয়েছে চারবার জাতীয় পুরস্কার পাওয়া গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান ও নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেলের বেলাতেও। জাতীয় পুরস্কার ছাড়াও দেশ-বিদেশে শতাধিক পুরস্কারে ভূষিত হওয়া গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জাতীয় পুরস্কারগুলোর অবস্থা শোচনীয়। এছাড়া আমার কাছে শতাধিক বেসরকারি ও প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক পুরস্কার আছে। সেগুলো বেশ ভালো আছে। আমার তো মনে হয়, এগুলো দায়সারাভাবে ও সঠিক উপদানে তৈরি নয়। যার ফলে এখন মরিচাসহ নানা ধরনের বিষয় সামনে আসছে।’

মরিচা পড়েছে সংগীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলীর পাওয়া সোনার মেডেলেও। আটবার জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত হওয়া এই বরেণ্য সংগীত পরিচালক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মরিচা তো পড়েছে আমাদের জাতির মধ্যে। এর আগে মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা বিদেশি বন্ধুদের এমন ভেজাল পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। আর আমরা তো দেশের মানুষ।’গীতিকবি রফিউজ্জামানের ট্রফি। এটার কিছ জায়গায় মরিচা ধরেছে গীতিকবি রফিউজ্জামানের ট্রফি। এটার কিছ জায়গায় মরিচা ধরেছে। ছবি- ওয়ালিউল বিশ্বাস

আক্ষেপ নিয়ে এই শিল্পী বলেন, ‘৭৮ সাল থেকে আমি টানা তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাই। কিন্তু নব্বইয়ের দশকের বেশ কিছু পদকের এই বেহাল দশা। আমার মেডেলগুলোতেও মরিচা পড়েছে।’ এর আগে গত পরশু ৩০ জুন বাংলা ট্রিবিউন ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের সোনার মেডেলে মরিচা!’ শিরোনামের সংবাদ প্রকাশ করে। এতে বর্ষীয়ান চিত্রগ্রাহক মাহফুজুর রহমান খান, পরিচালক শেখ নিয়ামত আলী ও গীতিকবি রফিকউজ্জমানের সোনার মেডেলে মরিচা পড়ার বিষয়টি উঠে আসে।

এদিকে গতকাল বিষয়টির দেখভালের দায়িত্বে থাকা তথ্য মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র বিভাগের অ্যাডমিন ও মন্ত্রণালয়ের অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি মোহাম্মদ আজহারুল হকের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এর আগের দিন তিনি চিত্রগ্রাহক মাহফুজুর রহমান খান, পরিচালক শেখ নিয়ামত আলী ও গীতিকবি রফিকউজ্জমানের সোনার পদকে মরিচা পড়ার বিষয়ে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছিলেন, ‘যদি এটি ঘটে থাকে, তাহলে খুবই দুঃখজনক। এখানে অনেকগুলো বিষয় আছে। মেডেল বা ক্রেস্ট বানাতে ঠিকাদার কোম্পানিকে দরপত্র দেওয়া হয়। এখন কোন কোন সালের মেডেলে মরিচা পড়েছে তা আগে বের করতে হবে। কারা মেডেল তৈরি করেছে এটা তখন বের করা যাবে। আমরা দ্রুত মাহফুজুর রহমান সাহেবের সঙ্গে যোগাযোগ করব।’

পুরো বিষয় নিয়ে গতকালও (১ জুলাই) তথ্য মন্ত্রণালয়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলা হয়। তবে বেশিরভাগই আসন্ন ‘চলচ্চিত্র পুরস্কার ক্রেস্ট ও মেডেল’ তৈরিতে ব্যস্ত বলে এড়িয়ে গেছেন! উল্লেখ্য, এবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আসর বসছে ৮ জুলাই রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে।

Check Also

আমি নায়িকা ছিলাম, নায়িকা হয়েই মরবো: নূতন

ঢাকাই সিনেমার সোনালি যুগের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নূতন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে মূল থেকে পার্শ্ব চরিত্র; তিন শতাধিক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *