‘কিছু বিষয়ে আমি একমত নই। তবে এখানে আমি জুরি হিসেবে আমন্ত্রিত, তাই আলোচনাতে অংশ নেইনি। নিজের ভাবনা এবং বিশ্বাস নিয়ে কথা বলার চাইতে কাজ করতেই আমি ভালবাসি। ভালবাসি ছবিতে নিজের খোঁজ করতে। সেটি আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।আর নাটক লেখার মাধ্যমে সবসময়ই চেয়েছি, তা যেন দর্শকের মনে বোধ ও স্বপ্ন তৈরী করে । কারন, স্বপ্ন সমাজ পরিবর্তন করে, বাস্তবতা নয়’
চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন বিপাশা হায়াত। ১৬ তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আমন্ত্রিত উইমেন ফিল্মমেকার সেকসনে জুরি হিসেবে রয়েছেন। উৎসবের শুরুর দিন থেকে প্রতিদিন থাকছেন। পাবলিক লাইব্রেরী, জাতীয় জাদুঘর বা আলিয়ঁস ফ্রাসেজ সব জায়গাতে সপ্রতিভ উজ্জ্বল উপস্থিতি।
সিনেমার আয়নায় দক্ষিণ এশিয়া এবং পাশ্চাত্যের নারীর ধারণাগত চিত্র’ বিষয়ক সেমিনারে অংশ নিয়েছিলেন আগুনের পরশমণি’ বা ‘জয়যাত্রা’ চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী।
‘সেমিনারটি নারীর বৈষম্য অধিকার বা সৃজনশীলতা বিষয়ক ছিল। কোন আলোচনায় অংশ নিলেননা যে? শুধু শুনে গেলেন?’ প্রশ্ন শুনে দাড়ালেন।। মুচকি হাসলেন।
বললেন, ‘এখানে আমি কেবলই শ্রোতা হিসেবে এসেছি । পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নির্মাতাদের বোধ বা অভিজ্ঞতা সরাসরি জানাটাও খুব বড় ব্যাপার। তাছাড়া আমি নারী ,বিশেষ অর্থে নারীবাদী নই। আমার নিজস্ব জীবনের অভিজ্ঞতায়, পুরুষ , এই পৃথিবীতে, নারীর পরিপুরক, যেমন নারী – পুরুষের। দুজনের সহ-অবস্থানই পৃথিবীকে সুন্দর করে । এককভাবে কেউই জীবনকে অর্থপূর্ণ করতে পারেনা ।’
আমি খুব স্বাধীনভাবে বড় হয়েছি। যেমন করে ’মানুষ’ বড় হয়। শুধু মেয়ে হিসেবে নয়।
বলেন, ‘আমার বাবা খুব ছোট বেলা থেকেই সব কিছুতে আমার মত নিতেন। কোন কিছু লিখলে বলতেন পড়ে দেখতো কেমন হয়েছে? অথবা তৌকীর কিছু লেখার পর আমাকে বলে, দেখতো কেমন হয়েছে? আমিও কোন কিছু করলে স্বতঃস্ফুর্তভাবে তার মত নেই। নারী বা পুরুষ-এমন কোন বিভাজনের চিন্তা আমার মাথায় আসেনা।’
চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে কথা বলছেন বিপাশা হায়াত
আমি জীবনযাপন করি একজন মানুষ হিসেবে, নিজেকে আবিষ্কার করার চেষ্টা করি মানুষ হিসেবে, শুধুমাত্র নারী হিসেবে নয়। তবে একথা অনস্বীকার্য যে আমি আমার মাতৃত্বকে ভালবাসি । নারী হিসেবে আমার সব পরিচয়কেই ভালবাসি। এবং এরচেয়ে সুন্দর আর কিছুই হতে পারেনা।
‘আমি বিশ্বাস করি শিক্ষা, জ্ঞান, র্কম, আত্মবশ্বিাস এবং আত্মর্মযাদাই নারী বা পুরুষ- নির্বিশেষে সব মানুষকে দিতে পারে মুক্তি।’
আর কথা আর বাড়াননা চিত্রকর, অভিনেত্রী। সামনের দিকে এগিয়ে চলেন। অনেক কথা না বলেও অনেক কিছু বোঝানো যায়।