Home / মিডিয়া নিউজ / ৬৫ বছর পর শৈশবের ঘরে দিলারা জামান

৬৫ বছর পর শৈশবের ঘরে দিলারা জামান

ছোট পর্দার পরিচিত মুখ দিলারা জামান। বড় পর্দায়ও তার সমান উপস্থিতি। কাজ নিয়ে তার ব্যস্ততার যেন কমতি নেই। বুধবার দুপুরে তিনি এসেছিলেন চ্যানেল আই কার্যালয়ে। অংশ নিয়েছেন ‘তারকা কথন’ অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠান শুরুর আগে তিনি কথা বলেছেন চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে-

কেমন আছেন?

ভালো আছি।

এই সময়ে কাজ নিয়ে কেমন ব্যস্ততা কাটছে?

কাজ করছি। কাজ না করলে বাঁচবো কিভাবে। বাসায় তো আমি একা। আমার ৫০ বছরের সাথী সেও চলে গেছে। বাসায় কোনো কাজের লোক নেই। সব কাজ আমি একা করি। আর প্রফেশনের কথা বলতে গেলে বলতে হবে সেটাও আমার আরেকটা পরিবার। সবাই আমাকে অনেক ভালোবাসে, শ্রদ্ধা করে। সবমিলিয়ে নিজের ব্যক্তিগত কাজ আর প্রফেশন নিয়ে সময়টা বেশ কেটে যায়।

আপনার পরিবারের সবাই তো দেশের বাইরে, তাদের কাছে যেতে ইচ্ছে করে না?

হ্যাঁ। যাই তো। তারা চায় আমি একেবারে চলে যাই ওদের কাছে। কিন্তু ওখানে তো সবাই অনেক ব্যস্ত। আর দেশের মানুষের এত এত ভালোবাসা রেখে আমি কোথায় পালিয়ে যাবো বলো!

ছোট পর্দা ছাড়াও আপনাকেতো প্রায়শই বড় পর্দায়ও দেখা যায়। সম্প্রতি কোন ছবিতে কাজ করেছেন?

সম্প্রতি আমি কাজ করেছি ‘আলতাবানু’ ছবিতে। সেখানে আমার উপস্থিতি বেশ অল্প সময়ের জন্য। যৌনপাড়ার মাসীর চরিত্রে আমি অভিনয় করেছি। সাজসজ্জা সব মিলিয়ে আমার অভিনয় প্রস্তুতিও ছিল তেমন। আসলে চরিত্র অনুযায়ি তো নিজেকে প্রস্তুত করতে হয়।

একসময় তো আপনি শিক্ষকতাও করেছেন, সেই সময়গুলোকে কী এখন মিস করেন কখনো?

হ্যাঁ, মিস করি। এইতো দুবছর আগে আমি আমেরিকায় যাচ্ছিলাম। তখন দুবাই এয়ারপোর্টে একজন এসে বললো ‘ম্যাম আমি আপনার ছাত্র।’ সেই ১৯৭৬-৭৭ সালের কথা। তারা তখন কত্ত ছোট ছিল। চেনার কথা নয়। তারপর সে দৌঁড়ে আরও কয়েকজনকে নিয়ে আসলো। সবাই আমার ছাত্র। আমার যে কি আনন্দ লেগেছে সেসময়!

শোনা যাচ্ছে আপনাকে নিয়ে একটা ডকুমেন্টারি করা হচ্ছে?

সাদাত হোসেন নামে একজন লেখক আমাকে নিয়ে এটা করছে। সেখানে আমার ছেলেবেলাকে তুলে ধরা হয়।আমি বেড়ে উঠেছি যশোরের ষষ্ঠীতলা পাড়ায়। যখন হিন্দুস্তান থেকে পাকিস্তান হয় তখন আমার বাবা আসানসোল থেকে বদলি হয়ে যশোরে আসেন। আমার স্কুল, যেখানে বেড়ে উঠেছি সেই বাড়ি সব তুলে ধরা হচ্ছে ডকুমেন্টারিতে।

আপনি যে বাড়িতে বেড়ে উঠেছেন সেটা কি এখনও আছে?

হ্যাঁ আছে। কিন্তু আমি কল্পনাও করতে পারিনি বাড়িটি অক্ষত থাকতে পারে! এমনকি আমি যে ঘরে থাকতাম সেই ঘরটাও আছে! এর আগে অনেকবার যশোরে যাওয়া হলেও সেই জায়গাটাতে কখনও যাবার সুযোগ হয়নি। এবার তো ঘটা করে গেলাম।

স্কুল, নিজের পুরোনো বাড়ি সব মিলিয়ে তো বেশ স্মৃতিকাতর হয়েছেন নিশ্চয়?

অনেক বেশি স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েছিলাম। এখনও তা থেকে বের হতে পারছি না। সোমাবার এসেছি যশোর থেকে। আমি ছোটবেলার সেই স্কুলে পড়েছি ১৯৪৭ সাল থেকে ৫০ সাল পর্যন্ত। আমাকে পেয়ে সবাই ছুটে এসেছে। আর আমি তো আবেগে থর থর করে কাঁপছিলাম। বাড়ির পাশের রেললাইন কি যে মজার স্মৃতি! রেলের হুইসেল শুনে ছুটে যেতাম। কারণ, ফ্রক পড়ে থাকতাম ছুটন্ত রেলের বাতাসে তা পতপত করে উড়তো!

বাড়িটি খুঁজে পেলেন কিভাবে?

বাড়িটি খুঁজে পাবার আশা ছেড়ে দিয়ে যখন চলে আসছিলাম, তখন তুষার নামে আমার মতো বয়সী একজন এসে বললেন আপনার বাড়ি এবং আপনার থাকার ঘরটি অক্ষত আছে। আমার কাছে তাকে দেবদূতের মতো মনে হচ্ছিল। সত্যিই কি যে অনুভূতি তা বলে বোঝানোর নয়। আমার ৭৫ বছর বয়সে এটা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ পাওয়া। ৬৫ বছর পরে আমি বাড়িটি খুঁজে পেয়েছি। তাদের আতিথেয়তায় আমি অনেক মুগ্ধ হয়েছি। আর সেই বাড়িতে যারা বাস করে তারা একান্নবর্তী পরিবার। সবই আমাকে মুগ্ধ করেছে।

অনেক অনেক ধন্যবাদ চ্যানেল আই অনলাইনকে সময় দেবার জন্য

তোমাকেও ধন্যবাদ এবং চ্যানেল আই অনলাইনের পাঠকদের জন্য শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা। তাদের জন্যই আমি আজ দিলারা জামান।

Check Also

আমি নায়িকা ছিলাম, নায়িকা হয়েই মরবো: নূতন

ঢাকাই সিনেমার সোনালি যুগের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নূতন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে মূল থেকে পার্শ্ব চরিত্র; তিন শতাধিক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *