





ঢাকা: ‘প্রথমে আমি বুঝতেই পারিনি কোথা থেকে পত্রিকাগুলো আমার ছবি পেলো। মিরপুরে যেখানে






নবজাতককে ছুড়ে ফেলার ঘটনা ঘটেছে তার আশেপাশেও আমি থাকি না। পরে বুঝতে পারি আমার






শত্রুদের কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে। আর কিছু অনলাইন যাচাই-বাছাই না করেই তা প্রকাশ করছে। তারা একবার আমার সঙ্গে কথা বলারও প্রয়োজন মনে করলো না?’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টালের খবরের সঙ্গে ভুল ছবি প্রকাশ করায় হয়রানির মুখে পড়া মডেল শ্রাবন্তি অনন্যা ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন।
গত ২৫ মে কয়েকটি অনলাইন পোর্টালে ৬ তলা থেকে নবজাতককে ছুড়ে ফেলার খবর প্রকাশ পায়। খবরের সঙ্গে শিশুটির মা হিসেবে অনন্যার ছবি প্রকাশ করা হয়।
এ নিয়ে গত সোমবার (২৭ মে) রাজধানীর খিলক্ষেত থানায় একটি মামলাও দায়ের করেছেন তিনি।
ফেসুবক লাইভে অনন্যা বলেন, এনটিভি অনলাইন, সময়ের কণ্ঠস্বরের মতো পত্রিকা খবর ও ছবি প্রকাশ করায় তা আরও বিশ্বাসযোগ্য হয়েছে। সেখান থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের গ্রুপগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাটি আমি ঘটিয়েছি মনে করে সবাই আমাকে ধিক্কার দিচ্ছে। যে পত্রিকাগুলো অহেতুক আমাকে এই হয়রানির মধ্যে ফেললো। তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেবো, যাতে আর কোনও মেয়েকে এ ধরনের হয়রানির সুযোগ না পায়।
অনন্যার মামলটি সাইবার ক্রাইমের তদারকিতে আছে। এ বিষয়ে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) নাজমুল ইসলাম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
তিনি বলছেন, ‘অনন্যা একজন নতুন প্রমিজিং মডেল ও অভিনেত্রী। কেউ শত্রুতাবশত তার ছবি ব্যবহার করে ওপরে লেখা ঘটনার মেয়েটি বানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে। আর নেটিজেনরা তো সেই অন্ধই রয়ে গেলাম। অনলাইনে যা দেখি তা বিশ্বাস করে দ্রুত জাজমেন্টাল হয়ে যাই। সেই মিথ্যা ছবিকে পুঁজি করেই যাচাই-বাছাই ছাড়াই নির্দোষ এই মডেল ট্রল হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং দেশের বড় বড় নিউজ পোর্টালে। ভিকটিম কোনোভাবেই এই ঘৃণ্য অপকর্মের অংশ নয়। আদতে মেয়েটির জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে মিথ্যা ও প্রপাগান্ডার সারথিরা।’
নাজমুল ইসলাম ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘ভিকটিম আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের মধ্যে আছে মিথ্যা তথ্য প্রচারকারী ফেসবুক আইডি, গ্রুপ, পেজ ও অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলো। আশা করি, সবাই সবার ভুল বুঝতে পেরে নতুন করে দুঃখ প্রকাশ করে পোস্ট দেবেন। নিউজ পোর্টালগুলোর উচিত নিউজটি উল্লেখ করে ক্ষমা চেয়ে নতুন নিউজ করা। যারা শুরুতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পোস্ট দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
এ বিষয়ে মডেল অনন্যা ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘যে কয়েকটি অনলাইনে নিউজ হয়েছে তাদের কোটি কোটি লাইক। ফলে এক ধরনের গ্রহণযোগ্যতা আছে। সবাই ভাবছে, এটা সত্য এবং ফেসবুকে গ্রুপগুলোতে শেয়ার করছে। এখনও সেসব লিংক কাজ করছে। আমি এর প্রতিকার কীভাবে পাবো। আমার যা ক্ষতি হওয়ার তা তো এই এক নিউজে হয়ে গেছে। এখন যদি ক্ষমা চেয়ে নিউজ করেও তারা, সেক্ষেত্রে যারা ওই আগের নিউজটি পড়েছিলেন তারা সবাই ক্ষমার নিউজটিও পড়বেন, এমন কোনও কথা কেউ দিতে পারবেন?’
রূপনগর আবাসিক এলাকার ১০ নম্বর রোডের ১৮ নম্বর বাড়িতে ঘটা এই ঘটনায় পুলিশ জানায়, ঘনিষ্ঠ এক আত্মীয়ের সাথে অবৈধ মেলামেশার ফলে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বাচ্চাটির জন্ম হয়। ফলে লোক লজ্জার ভয়ে সবার চোখের আড়ালে প্রসবের পর বাচ্চাটিকে বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে বাইরে ফেলে দেন মা।
ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ অভিযুক্ত মাকে আটক করে। আটক অবস্থায় তিনি নিজের অপরাধ স্বীকার করেন। কিশোরী মাকে পুলিশ নিজেদের হেফাজতে চিকিৎসা দিয়েছে।
কিশোরী মায়ের পরিচয় প্রকাশ না করার স্বার্থে বেশিরভাগ সংবাদমাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে তার ছদ্মনাম ব্যবহার করে জান্নাতুন নেছা। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। সেই মামলায় জান্নাতুন নেসার মা, মায়ের দ্বিতীয় স্বামী এবং স্বামীর ছোট ভাইকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে দুয়েকটি সংবাদমাধ্যম সংগৃীত সূত্রে জান্নাতুন নেছার ছবি বলে একজন তরুণীর ছবি প্রকাশ করে। কোথাও ছবিটিতে চেহারা ব্লার (ঝাপসা) করা হয়েছে। আবার কোথাও করা হয়নি।