





জহিরুল হকের ‘রংবাজ’ ছবির মধ্য দিয়ে ১৯৭৩ সালে প্রথম অ্যাকশন দৃশ্যর প্রচলন শুরু হয়।






সেখানে ভিলেন চরিত্রে অভিনয় করে সবার দৃষ্টি কেড়েছিলেন নায়ক জসিম। এই খলনায়ক একটা






সময় নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং তুমুল জনপ্রিয়তা পান। নায়িকা শাবানা ও রোজিনার






সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সুপারহিট সিনেমা তিনি উপহার দিয়েছেন। জসিম অস্ত্র হাতে যোগ দিয়েছিলেন ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে। পর্দায়ও তিনি শোষিত কিংবা বঞ্চিত মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতেন। ঢাকাই সিনেমার অ্যাকশনধর্মী চলচ্চিত্রের অন্যতম পথ-প্রদর্শক ছিলেন এই কিংবদন্তী। জ্যাম্বস প্রোডাকশনের অন্যতম কর্ণধার, ফাইট ডিরেক্টরের হাত ধরেই বদলে গিয়েছিল বাংলা সিনেমার অ্যাকশন-দৃশ্য।
১৯৯৮ সালের ৮ অক্টোবর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে পরপারে পাড়ি জমান জসিম। তাকে আজো শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন চলচ্চিত্রপ্রেমীরা। তাকে নিয়ে হাজারো স্মৃতি রয়েছে সহকর্মীদের।
নন্দিত এই নায়ককে খুব কাছ থেকে দেখেছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা বাবুল রেজা। তিনি গতকাল রাত নয়টার দিকে ফেসবুকে জসিমকে স্মরণ করে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। লিখেছেন: ‘ফাইটার থেকে ফাইট ডিরেক্টর, ফাইট ডিরেক্টর থেকে খলনায়ক, খলনায়ক থেকে নায়ক- এক অবিস্মরণীয় প্রতিভার নাম জসিম। আমি বহু রাত উনার বাসায় বসে দুজনে মিলে গল্পের লাইন আপ লিখেছি। সকালে ৫০০ টাকা কনভেন্স দিয়ে বলতেন- তোমার ভাবীর কাছ থেকে কনভেন্স নিয়ে যাও, আমার কথা বলো না। বিপদে-আপদে প্রাপ্য টাকার বাইরেও টাকা দিয়ে বলতেন- অফিসে বলো না কেটে রাখবে। এ ছিল এক অন্যরকম ভালোবাসা।’
তাদের মধ্যে মান-অভিমানের সর্ম্পকও ছিল। তিনি লিখেছেন: ‘উনি আমাকে জ্যাম্বস থেকে ‘টাইগার’ নামে সিনেমাটির মাধ্যমে পরিচালক হবার সুযোগ দিলেন। আমি তার বিপরীতমুখী জনৈক প্রযোজক পরিচালকের সহযোগী হিসেবে কাজ করার কারণে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরেও আসলেন। আমি অভিমান করে দীর্ঘ ১১ বছর ৪ মাস পর জ্যাম্বস্ থেকে বেরিয়ে আসি ১৯৯৭ সালে। সে বছর আমি ‘পারলে ঠেকাও’ সিনেমার মাধ্যমে পরিচালক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করি।
তখন তিনি কাছে ডেকে বলেছিলেন, তোমার অ্যাকশন ছবির হিরো কে? কষ্ট হলেও মাথা নিচু করে বলেছিলাম, গল্পের প্রয়োজনে মান্না। তিনি হতবাক চোখে চেয়ে রইলেন, নিঃশব্দে চলে গেলেন, অথচ তিনিই আমার ছবির মহরত ঘোষণা করেন। সেই কষ্ট আজও আমাকে কষ্ট দেয়। নিজেকে অপরাধী মনে হয়। আমার প্রথম ছবির প্রযোজক জসিম ভাই নন কেন? আমার প্রথম ছবির নায়ক জসিম ভাই নন কেন? এই প্রশ্ন দুটো আজও আমাকে কষ্ট দেয়।’