Home / মিডিয়া নিউজ / চলচ্চিত্রের আগের সেই জৌলুস আর নেই: রিনা খান

চলচ্চিত্রের আগের সেই জৌলুস আর নেই: রিনা খান

ঢাকাই সিনেমার চার দশকের ক্যারিয়ার তার। অভিনয় করেছেন পাঁচ শতাধিক সিনেমায়। তবে,

এই অভিনেত্রীকে সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে নানামাত্রিক কূট চরিত্রে। বর্তমানে রিনা খান কাজ

করছেন হাতে গোনা দু-চারটে ছবিতে। চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রথমেই তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

রিনা খান বলেন, এখনকার অধিকাংশ শিল্পীই কাজের প্রতি দায়িত্বশীল নয়। তারা শুধু অর্থ আর খ্যাতির পিছনে দৌড়াচ্ছে। যারা কাজকে ভালোবাসছে না তারা এই ইন্ডাস্ট্রিতে বেশিদিন টিকবে না। চোখের সামনে অনেককেই ঝরে পড়তে দেখেছি। তিনি বলেন, এখনকার যারা কাজ করছে অনেকেই সময়মতো শুটিংয়ে আসে না। ৭ টায় শুটিংয়ে আসার কথা থাকলে সেটে আসে দুপুর ২টায়। এতে পরিচালক সমস্যায় পড়ছেন আর প্রযোজকের মাথায় হাত উঠছে! আরও বলেন, চলচ্চিত্রের আগের সেই জৌলুস আর নেই।

কারণ কাজের প্রতি যারা নিষ্ঠাবান, দায়িত্ববান ছিলেন তারা অনেকেই আর বেঁচে নেই, কেউবা চলচ্চিত্র থেকে দূরে সরে গেছেন। এখন নতুন যারা কাজ করছেন তারা যদি চলচ্চিত্রকে ভালো না বাসে তবে এই শিল্প আগামীতে আরও তলিয়ে যাবে। আমি বললেই তো আর হবে না। প্রত্যেকের নিজের অবস্থান থেকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। সিনিয়র যারা দূরে সরে গেছেন বা যাচ্ছেন তাদের আবার চলচ্চিত্রে ফিরিয়ে আনতে হবে। নতুনরা সিনিয়দের কাছে যেতে চায় না। আমাদের সময় কিন্তু এটা একদম হতো না। আমরা সিনিয়দের সম্মান দিয়ে তাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতাম।

পাঁচ শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করলেও এর মধ্যে প্রায় ৫০টির মতো চলচ্চিত্রে ইতিবাচক কিংবা নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করেছেন রিনা খান। বললেন, আসলে আমার অধিকাংশ চলচ্চিত্রের কাজ ছিল খল অভিনেত্রী হিসেবে। অন্তত ৫০টি ছবিতে পজেটিভ চরিত্রে কাজ করেছি। এর মধ্যে নায়িকার ভূমিকায়ও অভিনয় করেছি বেশ কয়েকটি ছবিতে। ‘প্রেম যমুনা’, ‘মেঘ বিজলি বাদল’ এমনকি বুলবুল আহমেদের ‘মহানায়ক’ ছবিতেও আমি সহ-নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করেছি।

তবে এতসব ছবির ভিড়ে দেবাশীষ বিশ্বাসের ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’ ও মোহাম্মদ হান্নানের ‘পড়ে না চোখের পলক’ ছবি দুটি তাকে ব্যাপক প্রশংসিত করেছে বলেন মনে করেন রিনা খান। তার ভাষ্য, আমি চলচ্চিত্র থেকে বিদায় নিয়েছিলাম। কাটপিস আর বাংলা চলচ্চিত্রে ক্রমাগত নোংরামিতে বাধ্য হয়ে চলচ্চিত্র থেকে সরে দাঁড়াই। এর তিন বছর পরে অফার পাই দেবাশীষ বিশ্বাসের ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’ ছবিতে। গল্পটিও আমার বেশ ভালো লেগে যায়। আর চলচ্চিত্রে ফিরে আসার এটি একটি কারণ। পড়ে না চোখের পলক ছবিটি আমাকে তৃপ্তি এনে দিয়েছিল। এই দুটি ছবির চরিত্র আমার মনে দাগ কেটে থাকবে আজীবন।

সেলুলয়েডের ফিতায় রিনা খান সুখের সংসারে বাগড়া দিলেও বাস্তব জীবনে তিনি ঠিক তার উল্টো। অভিনয়ের বাইরে পরিবার আর প্রবাসী সন্তানকে সময় দেয়া ছাড়া তেমন কিছু করেন না। তিনি বলেন, এখন অবশ্য পরিবারকেই বেশি সময় দিচ্ছি। স্বামীর ব্যবসার সাথেও সম্পৃক্ততা রয়েছে। বছরের ৬ মাস দেশের বাইরেই কাটে আমার। কারণ, বড় ছেলে আসিফ হোসেন শান্ত ও ছোট ছেলে সিহাব হোসেন অন্তু দুজনেই প্রকৌশলী। দুজনই থাকে জার্মানিতে।

বড় ছেলের স্ত্রী থাকেন সেখানে। ছোট ছেলের স্ত্রী এখন তার সাথে ঢাকায়। বছরের ৩ মাস ছেলেদের সাথেই থাকি। আর তিনমাস যুক্তরাষ্ট্রে। ছোটছেলের স্ত্রী উত্তরায় একটা বেসরকারি ইউনিভার্সিটিতে পড়ে, এজন্য এখন তার কাছেই থাকি। এছাড়া বাসার ছাদে ফুলের বাগান করেছি, সেটা দেখাশুনা করি। আর শুটিং থাকলে তো শুটিংয়ে চলে আসি।-চ্যানেল আই অনলাইন

Check Also

আমি নায়িকা ছিলাম, নায়িকা হয়েই মরবো: নূতন

ঢাকাই সিনেমার সোনালি যুগের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নূতন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে মূল থেকে পার্শ্ব চরিত্র; তিন শতাধিক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *