





প্রয়োজনের কারণেরই নিত্যদিনের কর্মকাণ্ডে আধিপত্য বেড়েছে সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমের






(সোস্যাল মিডিয়ার)। বিশ্বায়নের যুগে মানুষকে কাছাকাছি আনা, এক সুতায় সবাইকে গেঁথে






রাখাসহ যোগাযোগ অনেক সহজ করেছে এই মাধ্যম। কিন্তু দেশের কিংবদন্তি অভিনেত্রী ববিতা এ বিষয়টাকে দেখেন ভিন্নভাবে।






তিনি মনে করেন, সোসাল মিডিয়া বিশেষ করে ফেসবুক যোগাযোগ অনেক সহজ করলেও মানুষের সম্পর্কগুলো হালকা করে দিয়েছে। গুণী এই অভিনেত্রী বলেন, ‘ফেসবুক মানুষের আবেগকে কেড়ে নিচ্ছে। মানুষে মানুষের সম্পর্ককে নষ্ট করে দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘সরাসরি মানুষের মধ্যে যে হৃদ্যতা থাকে, তা কোনোভাবে ফেসবুকের মাধ্যমে হয় না, হওয়া সম্ভব না। বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে ঘনিষ্ঠ মানুষগুলোর সম্পর্ক ফেসবুকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে।
দেখা-সাক্ষাতের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যাচ্ছে। এমনকি আমি এমন অনেক পরিবারকে জানি, বাবা-মায়ের কাছ থেকে দূরে থাকা সন্তান মাঝে মাঝে ফেসবুকে কথা বলে অথচ ছয় মাসে একবারও দেখা করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করে না। বিষয়টা খুবই মর্মান্তিক। এভাবে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কগুলো হালকা হয়ে যাচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমার কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই। আমার দুই বোন সুচন্দা ও চম্পার সাথে কথা বলতে চাইলে ফোন করি। অথবা আমরা সরাসরি একে অপরের সাথে দেখা করি, আড্ডা দেই। আমার ছেলে কানাডায় থাকে। ছেলের সাথে ফোনে কথা বলি নিয়মিত। অথবা দেখতে মন চাইলে চলে যাই সেখানে। আমাদের সম্পর্কগুলো অটুট আছে।’
সম্প্রতি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর থেকে এফডিসির মধ্যে একটি চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। দেশীয় শিল্পীদের মধ্যে মতবিরোধ বাড়ছে। পাশাপাশি অবাধে আমদানি হচ্ছে ভারতীয় চলচ্চিত্র। এ নিয়ে কেউ কিছু বলছেন না।
এমতবস্থায় দেশের চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা নিয়ে ভীষণ চিন্তিত অভিনেত্রী ববিতা। তার মতে, ডিজিটালের নামে বাংলাদেশী সিনেমা যে কোন দিকে যাচ্ছে তা তিনি নিজেও বুঝতে পারছেন না।
ববিতা বলেছেন, ‘সেই পুতুল খেলার বয়সে আমি অভিনয়ের সাথে যুক্ত হয়েছি। ছবিতে অভিনয় নিয়ে আমি বেশ সিরিয়াস ছিলাম। ভালো ছবিতে অভিনয়ের জন্য বরাবরই চেষ্টা করে গেছি। এটাই আমার সবকিছু ছিল। অনেকে হয়তো ভাবেন সিনেমায় অভিনয় করে আমি অনেক টাকা কামাব। এ বিষয়টা অবশ্য আমার ভেতরে কোনো দিন কাজ করেনি।’
ববিতা বলেন, ‘আমি বরাবরই ভালোমানের কাজ করে যেতে চেয়েছি। বরাবরই চেয়েছি নিজের অভিনীত সিনেমা নিয়ে দেশ-বিদেশের নামকরা সব চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেব। আমার অভিনীত ছবি দেখে সবাই হাততালি দেবেন। এ ব্যাপারটা আমার মধ্যে বেশ নাড়া দিত।
কিন্তু এখন সে অবস্থা দেখছি না।’ তিনি বলেন, ‘গল্প নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারছি না। যে ধরনের ছবি নির্মিত হচ্ছে, সেগুলো সে অর্থে যেমন ব্যবসায়িক সফলতা পাচ্ছে না; তেমনি দর্শকপ্রিয়ও হতে পারছে না।
এখনকার চলচ্চিত্রের এ অবস্থা দেখে গভীর চিন্তার মধ্যে আছি। কবে যে আমরা এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসব, তা-ও বুঝতে পারছি না।’