





আর কখনও আসবে না ফিরে প্রিয় কর্মক্ষেত্র এফডিসিতে। আর বসবেন না পরিচালক সমিতির






সামনে চেয়ার পেতে। আর কোনদিন দেখা হবে না আমজাদ হোসেনের সঙ্গে। কখনও আর ঘণ্টার






পর ঘণ্টা আড্ডা দিয়ে মাতিয়ে রাখবেন না তিনি। সবকিছু ছেড়ে পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে।






শনিবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে আমজাদ হোসেনের মরদেহ এফডিসিতে নিয়ে আসা হয়। আর প্রিয়






মানুষটিকে শেষবারের মতো একনজর দেখতে এসেছিলেন চলচ্চিত্রের সকল মানুষেরা। সেই ভিড়ের মধ্যে দেখা গেল এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তারানা হালিমকে। কফিনে প্রিয় মানুষটির মুখ দেখতে দেখেতে কাঁদছিলেন ঢাকাই সিনেমার তিনবোন সূচন্দা,ববিতা ও চম্পা। কাঁদছিলেন জনপ্রিয় নায়ক আলমগীর,অভিনেত্রী আনোয়ারাসহ আরও অনেকেই।
কান্নাভরা চোখে বন্ধুর মুখ দেখছিলেন আমজাদ হোসেনের জনপ্রিয় বেশকিছু গানের সুরকার আলাউদ্দিন আলী। তার পাশে ছিলেন তপন চৌধুরী, ফুয়াদ নাসের বাবু। আর সেটির সাথে সাথে এফডিসির বাতাসে উড়ছিল মন খারাপের ঘ্রাণ। উচ্ছলতায় মেতে থাকা মানুষগুলোর মন খারাপ শুধু একটা কারণেই \’আর কখনো দেখা হবে না আমজাদ হোসেনের সঙ্গে!
বাদ জোহর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) অনুষ্ঠিত হয় আমজাদ হোসেনের দ্বিতীয় জানাজার নামাজ। এখানে উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার,নির্মাতা বদিউল আলম খোকন,শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান,জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন,চিত্রনায়ক ফারুক, এটিএম শামসুজ্জামান,অমিত হাসান,হেলাল খান,চিত্রনায়ক ওমর সানি,ফেরদৌস, রিয়াজ,সাইমন,আরিফিন শুভ,ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাউদ্দিন লাভলু,সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিকসহ চলচ্চিত্র ও নাট্যাঙ্গনের অনেকেই।
জানাজা শেষে আমজাদ হোসেনের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া করা হয়। এরপর জামালপুর নিজ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে গুণী এই নির্মাতার মরদেহ। তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তার বাবা-মায়ের কবরের পাশেই দাফন করা হবে তার মরদেহ।
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর) মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। এক সপ্তাহ পর শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তার মরদেহ ঢাকায় এসে পৌঁছালে প্রথমে তার আদাবরের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর আদাবরের বায়তুল আমান মসজিদে তার প্রথম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার নামাজ শেষে রাতেই তার মরদেহ বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছিল।
১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট জামালপুরে জন্ম নেয়া আমজাদ হোসেন চিত্র পরিচালনার বাইরে লেখক,গীতিকার,অভিনেতা হিসেবেও পরিচিত ছিলেন।
\’হারানো দিন\’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে ১৯৬১ সালে রূপালি পর্দায় তার অভিষেক হয়। পরে চিত্রনাট্য রচনা ও পরিচালনায় তিনি বেশি সময় দেন। ১৯৬৭ সালে মুক্তি পায় তার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র \’খেলা\’। গান লেখা,চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান আমজাদ হোসেন। এছাড়া সরকার তাকে একুশে পদকেও ভূষিত করেছিলেন।