





’আমার জীবনে, আমি মনে হয়না এতো আশ্চর্য হইনি। আমি কলকাতা ছিলাম, ওর ফোনে পেলাম,






বলল আমাকে এয়ারপোর্ট এ নিতে আসবে। এয়ারপোর্ট এ নেমে দেখি, আমার জন্য অপেক্ষা করছে।






একটা ব্রান্ড নিউ unregistard হ্যরিয়ার জীপ এ। জিরো কিলোমিটার। কাছে যেতেই আমাকে ড্রাইভ






করতে বললো আর ড্রাইভার ছেড়ে দিল।’ আব্দুল আজিজ১’নতুন এবং এতো দামি গাড়ি দেখে আমি অবাক,






জিজ্ঞাস করে জানলাম গতকাল কিনেছে । আমাকে বলল হাতিরঝিল এ নিয়ে যেতে। হাতিরঝিল এ রাস্তায় গাড়ি
পার্ক করতে বলল। করলাম। নিজে নামল এবং আমাকে নামতে বলল। খুব মিষ্টি করে বলল, হাত বাড়াও।
বাড়ালাম। গাড়ির চাবিটা আমাকে দিয়ে বলল, গাড়িটা তোমার জন্য কিনেছি, এখন দয়া করে আমাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে, গাড়ি নিয়ে তুমি চলে যাও।
’বলে গাড়িতে উঠে বসলো । আমি হতবাক এবং বিহ্বল। কাঠের পুতুলের মত দাঁড়িয়ে রইলাম। আমার কোনো বোধ শক্তি নেই। ও গাড়িতে বসে ডাকাডাকি করাতে হুস ফিরল ।
এরপর আমি গাড়িতে গিয়ে ড্রাভিং সীটে চুপ করে বসে রইলাম এবং ঘটনাটা হজম করার চেষ্টা করছি। একবার মনে হচ্ছিল এটা হয়তো সত্যি না, আমি স্বপ্ন দেখছি।’
’এমন না যে আমি এতো দামি গাড়ি চালাইনি। এর চেয়ে অনেক বেশী দামি গাড়ি আমার ছিল, আমার বর্তমানের গাড়িটাও হয়তো এর চেয়ে কম দামি না। কিন্তু, এই পুচকি মেয়েটি, আমাকে এত দামি গাড়ি দিচ্ছে, শুধু উপহার স্বরপ। কোনো কিছুর বিনিময় ছাড়া ? পৃথিবীতে এতো পাগল আছে ?’
’হুশ ফিরতেই জিজ্ঞাস করলাম, এতো টাকা কোথায় পেলে ? কোনো উত্তর নেই (আমি জানতাম অনেক কষ্ট করে তিলে তিলে টাকা জমাচ্ছে একটা ফ্লাট কিনার জন্য । আমাকেও কয়েকদিন আগে বলেছিল, একটা ভালো ডেভেলপার দেখে ওর যে টাকা আছে সেটা দিয়ে একটা ফ্লাট কিনে দিতে। আমি কোনো উত্তর দেই নাই, কারণ এর মধ্যে আমি জড়াতে চাইনি)।’
’আবার চেপে ধরলাম কোথায় টাকা পেয়েছে , অনেক জোরাজোরির পড় বলল, ফ্লাট কিনার সব টাকা তুলে, গাড়িটা কিনেছে ।
তার কাছে আর টাকা নেই, তাই আমি যেন নিজ টাকায় আপাতত এই গাড়িটা রেজিস্ট্রেশান করে নেই।’
’এতোক্ষণে সব পরিষ্কার হলো। কিছুদিন আগে একসাথে এক পার্টি থেকে ফিরছিলাম, সামনে একটা হ্যরিয়ার জীপ দেখে বলেছিলাম, আমার সেই উনি (নাম এখানে বলছিনা, সঙ্গত কারণেই) সব সময় বলত, আমাকে হ্যরিয়ার জীপ কিনে দেবে। কখন বলত রাঞ্ঝ রোভার কিনে দিবে। (আগে আমি উনার এই কথা বিশ্বাস করতাম, টাকা হলে হয়তো দেবে, গত এক মাস আগে শিউর হয়েছি যে গত ৪ বছর যা বলেছিল সব হিসাব করে ও বুদ্ধিমানের মতো বলেছিল।’
’এই বলে আমাকে দেখিয়েছে উনি আমাকে অনেক ভালোবাসে। আর উনি ভালোবাসার অভিনয় করে আমার কাছ থেকে নিয়েছে গাড়ি, ফ্লাট , টাকা । আতা আমি আগে বুজিনাই । গত এক মাস আগে ১০০% নিশ্চিত হয়েছি যে গত ৪ বছর শুধু প্রতারিত হয়েছি, কারণ কিছুদিন আগে আমাদের সম্পর্ক নরমাল হতে শুরু করল, আবার দাবী করল, আমাকে ওই সিনেমার নায়িকা করতে হবে, কিন্তু আমার পক্ষে এবার সম্ভব হল না, কারণ জয়েন্ট ভেঞ্চার সিনেমা।’
’যখন বললাম, আমি পারছি না ওই সিনেমার নায়িকা করতে, তারপর উনি দ্রুত বাসায় ফিরে, একটা ম্যাসেজ দিলেন,
এবং আমাকে what’s app এ ব্লক করে দিলেন, ফোন করলে কেটে দিত। তখন ১০০% নিশ্চিত হলাম, গত ৪ বছর আমি শুধু ব্যবহার হয়েছি উনার গাড়ি, ফ্লাট, টাকা আর ক্যারিয়ার এর জন্য । সবাই আমাকে বলত এবং সাবধান করতো । আমি কারো কথা বিশ্বাস করতাম না । কিন্তু শেষ বার ১০০% নিশ্চিত হয়েছি)। কিন্তু কখন দেবে না জানি । তবুও আমি আশায় আছি হয়তো দিবে।’
’আর এইটা আমার কাল হল । পাগলিটা হ্যরিয়ার কিনে হাজির । জিজ্ঞাস কলাম কেন কিনলে ?
উত্তর: তোমাকে অনেক রেসপ্যাক্ট করি, তুমি মানুষ হিসাবে অনেক ভালো, তোমাকে অনেক অনেক পছন্দ করি । তোমার সাথে আজীবন বন্ধুত্ব রাখতে চাই। হ্যরিয়ার জীপ তোমার অনেক পছন্দের, তাই আমার যা আছে তার সব এবং আমার আগামী ১ বছরের সব আয় (তার আগামী ১ বছরের সময় বিক্রি করতে হয়েছে এই গাড়ির টাকা যোগাড় করতে) দিয়ে এই গাড়িটা কিনেছি । এর বেশী দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয় ।’
’জিজ্ঞাস করলাম – আমাকে এতো পছন্দ করার কারণ ? আমার কি সবচেয়ে ভালোলাগে ?
উত্তর: আমার live কবিতা বলা (একটু খুলে বলি, আমার একটা বাজে গুণ আছে, সেটা হলো – যেকোনো মুহূর্তে ওই situation এর ওপর ইনস্ট্যান্ট বানিয়ে ছন্দ মিলিয়ে কবিতা বলতে পারি, যেকোনো সাবজেক্ট এর ওপর, যা আগে থেকে লিখি নাই বা ভাবি নাই, এই কবিতা শুধু একবার এ বলতে পারবো, কারণ কখন কথাও লিখে রাখিনা বা নোট রাখিনা)। এবং ও আমাকে একজন খুব বিখ্যাত মানুষের সাথে তুলনা করল (নাম বলছি না, কারণ আমি উনার পায়ের নখের সমান ও না)।’
’যাক, আর কিছু বললাম না। গাড়ি ড্রাইভ করে জাজ এ গেলাম। আমার ড্রাইভারকে ফোনে করে আমার বাসা থেকে গাড়ি আনালাম। এবং ওর এতো কষ্টের টাকার গাড়ি আমি নিতে পারি না, এটা বোঝাতে চেষ্টা করলাম। কোন মতেই বোঝাতে পারি না । জাজ এ বসে রাত ১২.৩০ এ বোঝাতে সক্ষম হলাম যে গাড়িটা ফেরত দিয়ে , টাকাটা ফেরত নিয়ে আসতে (তার এই গাড়ির দরকার নেই, কারণ already তার ভালো গাড়ি আছে)। তারপর, আমার ড্রাইভার দিয়ে, ওর গাড়ি সহ ওকে বাসায় পাঠিয়ে দিলাম।’
আমার জীবনটা অনেক বৈচিত্র্যময়। যেমন টাকার অভাবে পার্কের বেঞ্চে ঘুমিয়েছি, তেমনি বিশ্বের সেরা হোটেল গুলিতেও ঘুমিয়েছি । অনেক রকমের বিচিত্র অভিজ্ঞতায় ভরা আমার জীবন । কিন্তু জীবনে এমন বিচিত্র অবস্থার মুখমুখি হইনি। বাসায় ফিরে মেয়েটার জন্য খারাপ লাগছে, আবার এটাও মনে হচ্ছে – আহা জীবনটা আসলেই কতই না সুন্দর , কতই না মধুর।’
২০১৬ সালে আজকের এই দিনে এভাবে নিজের ফেসবুক পেইজে কথাগুলো শেয়ার করেছিলেন জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজজি। ফেসবুক আজ সেই মুহূর্তগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে দিলে আব্দুল আজিজ পুনরায় সেই দিনের লেখাটি শেয়ার করে আবারও লিখেছেন, ’আহারে জীবন, আহা জীবন….. ’
তথ্যসূত্র : আব্দুল আজিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজ।